১. উপজেলা শিল্ন কলা একাডেমী।
২. হাইমচর উপজেলা প্রজন্ম বাংলাদেশ।
৩. আদর্শ শিশু শিল্প কলা একাডেমী।
৪. আলগী দূর্গাপুর (উ:) ইউনিয়ন সাংস্কৃতিক সংগঠন
বাংলাদেশ শিশু একাডেমী মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, যার উদ্দেশ্য দেশের শিশুদের শারীরিক, মানসিক, সাংস্কৃতিক এবং সুপ্ত প্রতিভার বিকাশে সহায়তা করা। ১৯৭৬ সালে রাষ্ট্রপতির এক অধ্যাদেশ বলে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে সারা দেশে একাডেমীর ৭০টি শাখা রয়েছে। ঢাকার পুরাতন হাইকোর্ট এলাকায় এর সদর দপ্তর অবস্থিত।
বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৫০.৫৩% অর্থাৎ প্রায় অর্ধেকই শিশু। এই শিশুদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যেই বাংলাদেশ শিশু একাডেমী প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। প্রথমে এর কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছিল সেগুনবাগিচায়, পরে ১৯৭৭ সালে এটি স্থানান্তরিত হয় পুরাতন হাইকোর্ট এলাকায়। প্রায় ৩.৬৯ একর ভূমির উপর চারটি ভবনে শিশু একাডেমীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ভবনসমূহ হচ্ছে- প্রশাসনিক ভবন, মিলনায়তন, যাদুঘর ও আর্ট গ্যালারি এবং প্রকাশনা ও লেকচার থিয়েটার ভবন।
শুরুতে একাডেমীর কার্যক্রম রাজধানী কেন্দ্রিক হলেও পরবর্তীকালে এর শাখা সারা দেশে এর শাখা বিস্তৃত হয়। তৃণমূল পর্যায়ে একাডেমীর কার্যক্রম ছড়িয়ে দেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হওয়ার প্রেক্ষিতে ১৯৮০-৮১ সালে তৎকালীন বৃহত্তর ২০টি জেলায় শিশু একাডেমীর শাখা স্থাপন করা হয়। ১৯৯৩-৯৫ সালে বাকি ৪৪টি জেলায় এবং ১৯৯৬-৯৭ অর্থবছরে পরীক্ষামূলকভাবে ৬টি বিভাগের ৬ উপজেলায় শাখা স্থাপন করা হয়।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর কার্যক্রম পরিচালিত হয় ১৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি বোর্ড অব ম্যানেজমেন্ট-এর মাধ্যমে। পরিচালক এই প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী প্রধান। একাডেমীর বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য মোট ছয়টি বিভাগ রয়েছে। এগুলি হলো: প্রশাসন, প্রকাশনা, সাংস্কৃতিক, জাদুঘর, গ্রন্থাগার ও হিসাব বিভাগ। একাডেমীর মূল কর্মকান্ড পরিচালিত হয় কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে। সারা দেশের জেলা ও উপজেলা শাখাগুলি এ কর্মসূচি অনুসরণ করে। একাডেমীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বর্তমানে ২০ জন কর্মকর্তা ও ৫৬ জন কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। ঢাকার বাইরের জেলা শাখাগুলির প্রত্যেকটিতে রয়েছেন একজন করে কর্মকর্তা ও চারজন করে কর্মচারী, আর ছয়টি উপজেলা শাখার প্রত্যেকটিতে একজন করে কর্মকর্তা ও দুজন করে কর্মচারী। জেলা শাখাগুলির সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি পরিচালনা কমিটি রয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি উপজেলায় শিশু একাডেমীর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে স্থানীয় কমিটি রয়েছে।
একাডেমীর কার্যক্রমের পরিধি নির্ধারণের জন্য ১৯৮৩ সালে একটি কমিটি গঠিত হয়। এ কমিটির সুপারিশ অনুসারে বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর মূল দায়িত্বসমূহ হল: ১. শিশুদের উপযোগী বিভিন্ন বই, মাসিক পত্রিকা কোষগ্রন্থ ইত্যাদি প্রকাশনা, ২. শিশুদের পাঠের সুবিধা সৃষ্টি এবং পাঠাভ্যাস গড়তে বিভিন্ন শিক্ষামূলক কর্মসূচি যেমন কুইজ প্রতিযোগিতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি প্রতিযোগিতা ইত্যাদি আয়োজন, ৩. প্রতিবছর শিশুদের জন্য জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা, মৌসুমী প্রতিযোগিতা এবং আনন্দমেলার আয়োজন, ৪. বাংলাদেশের শিশুদের আন্তর্জাতিক চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি, ৫. শিশুতোষ চলচ্চিত্র নির্মাণ, ৬. বিভিন্ন দেশে শিশু সাংস্কৃতিক দল প্রেরণ, ৭. বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য এবং বিভিন্ন দেশের ভৌগোলিক তথ্যসমৃদ্ধ শিশু জাদুঘর পরিচালনা, ৮. জাতীয়, আন্তর্জাতিক এবং ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসসহ রবীন্দ্র-নজরুল জন্মজয়ন্তী এবং বিভিন্ন সামাজিক ও ঐতিহ্যগত আচার অনুষ্ঠান উদযাপন এবং ৯. শিশুদের জন্য বিভিন্ন বিষয়ে সাংস্কৃতিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমী বছরব্যাপী যে সব কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা। ১৯৭৮ সাল থেকে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ক্রীড়ার ৬২টি বিষয়ে উপজেলা, জেলা, আঞ্চলিক ও জাতীয় এ চারটি পর্যায়ে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রতিযোগিতায় প্রতিবছর সারাদেশে প্রায় ৩ লাখ শিশু অংশগ্রহণ করে তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ লাভ করে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস